নির্বাচন দেরি মানেই দেশের অগ্রগতির পথ রুদ্ধ: সিলেটে মির্জা ফখরুলের দৃপ্ত ঘোষণা

 

নির্বাচন দেরি মানেই দেশের পিছিয়ে পড়া: মির্জা ফখরুল

সিলেটের দোয়া মাহফিলে বিএনপি নেতাদের উপস্থিতি

সিলেট নগরীর পাঠানটুলায় অনুষ্ঠিত এক দোয়া ও আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “নির্বাচন যত দেরি হবে, বাংলাদেশ ততই পিছিয়ে যাবে।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ মালিক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ও এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

শহীদ জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া

মাহফিলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফিরাত ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়। এটি শুধু রাজনৈতিক কার্যক্রমই নয়, বরং দলের নেতা-কর্মীদের মানসিক ঐক্যের প্রতীক হয়ে ওঠে।

যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে মাহফিল

এই আয়োজনটি যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে ও স্থানীয় জেলা-মহানগর বিএনপির ব্যবস্থাপনায় হয়, যা প্রবাসী নেতাদের অংশগ্রহণকে তুলে ধরে।

অন্যান্য পোস্ট

নির্বাচনের প্রস্তুতির বার্তা

মির্জা ফখরুল দলীয় কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিন। মানুষের হৃদয়ে ভালোবাসার জায়গা করে নিন। বিএনপিকে এমনভাবে গড়ে তুলুন যেন মানুষ নিজের দল মনে করে।”

মানুষের ভালোবাসা অর্জনের আহ্বান

তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “বিএনপিকে ভালো না বাসলে কেউ ভোট দেবে না। আমাদেরকে প্রমাণ করতে হবে যে, আমরা মানুষের দল।”

বিএনপিকে বিশ্বাসযোগ্যতার প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলার তাগিদ

“আমরা যেন এমন কিছু না করি, যাতে জনগণের চোখে খারাপ হই। কেউ যেন না বলতে পারে যে বিএনপির কর্মীরা চাঁদাবাজি করে, জমি দখল করে।”

ইউনূসের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ

তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনায় সম্ভাব্য নির্বাচনের তারিখ

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, “আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।”

নির্বাচন বিলম্ব হলে দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি

“নির্বাচন দেরি হলে অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। বিনিয়োগকারীরা ফিরে যাবে। বিচারব্যবস্থা আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।”

অন্যান্য পোস্ট

বিনিয়োগ ও অর্থনীতির ভবিষ্যৎ

নির্বাচিত সরকারের গুরুত্ব

“নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো দেশে স্থিতিশীলতা আসতে পারে না। এটা আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি দেয়।”

বিচারব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি

“মবোক্রেসি বাড়বে, সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। তাই আর দেরি করা চলবে না।”

দলীয় শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তি রক্ষার আহ্বান

আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মির্জা ফখরুল নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেন, “জনগণ যাতে আমাদের দিকে আঙুল না তোলে, সে দিকটা খেয়াল রাখতে হবে। কাজ করতে হবে সৎভাবে, মানুষের জন্য।”

গত ১৫ বছরের লড়াইয়ের চিত্র

মিথ্যা মামলা ও নির্যাতনের বর্ণনা

তিনি বলেন, “সিলেটেই অনেক নেতাকে পায়ে-হাতে দড়ি বেঁধে মাসের পর মাস আটকে রাখা হয়েছে। নির্যাতন, জেল-জুলুম, মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন হাজারো নেতা-কর্মী।”

 অন্যান্য পোস্ট

শেখ হাসিনার পতনের নেপথ্যে দীর্ঘ সংগ্রাম

“শেখ হাসিনা এমনি এমনি দেশ ছাড়েননি। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম, ত্যাগ আর রক্তের বিনিময়ে। আমরা সেই ইতিহাসের অংশ।”

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন

বাকস্বাধীনতা ও ভোটাধিকারের বাস্তবায়ন

“আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই, যেখানে ভোটের অধিকার থাকবে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। সরকার হবে জনগণের সেবক, শাসক নয়।”

শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার স্বপ্নের বাংলাদেশ

“শহীদ জিয়া গ্রামে গ্রামে খাল কেটে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। খালেদা জিয়া মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন। আমরা সেই বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাই, যেখানে দেশের প্রতি ভালোবাসা থাকবে, স্বপ্ন থাকবে।”

অন্যান্য পোস্ট

দিনব্যাপী কর্মসূচি ও সফরসূচি

মাজার জিয়ারত ও সভায় যোগদান

সকালে ফ্লাইটে সিলেটে এসে মির্জা ফখরুল প্রথমেই হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করেন। এরপর তিনি সভাস্থলে যোগ দেন।

শহীদ সন্তানদের সম্মাননা অনুষ্ঠান

বিকেলে দরগাগেট এলাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় শহীদ সন্তানদের সম্মাননা অনুষ্ঠান। এতে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

মির্জা ফখরুলের বক্তব্য ছিল শক্তিশালী, প্রেরণাদায়ী এবং সময়োপযোগী। তিনি শুধু দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানাননি, বরং সমগ্র জাতির সামনে তুলে ধরেছেন একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক ও উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন। এই আহ্বান শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নয়—এটি হতে পারে একটি জাতির পুনর্জাগরণের ডাক।

১. মির্জা ফখরুল কোথায় এই বক্তব্য দেন?
তিনি সিলেট নগরের পাঠানটুলায় সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারে দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

২. মূল বার্তা কী ছিল তাঁর বক্তব্যে?
নির্বাচনের বিলম্ব হলে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা আরও খারাপ হবে।

৩. কারা উপস্থিত ছিলেন এই দোয়া মাহফিলে?
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি, জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দসহ অনেকে।

৪. তিনি কীভাবে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেছেন?
নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে, জনগণের ভালোবাসা অর্জনে এবং দুর্নীতি এড়িয়ে চলতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

৫. নির্বাচন নিয়ে কী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি?
তিনি আশাবাদী যে জনগণের সমর্থনে শিগগির একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।