Banner 728x90


সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ফুটবল দলকে ধন্যবাদ জানানো হলো


 
দেশের ক্রীড়া অঙ্গনে একটি উজ্জ্বল দিন হিসেবে চিহ্নিত হলো আজকের এই দিনটি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আন্তঃবাহিনী ফুটবল প্রতিযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেনাবাহিনী ফুটবল দলের অসামান্য সাফল্য অর্জনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির সকল খেলোয়াড়, কোচ ও সহকারী কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।

ফুটবল দলের সাফল্যে জাতীয় গর্ব

গত মাসে অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ এশীয় সামরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা (South Asian Military Games)। প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফুটবল দল শ্রীলঙ্কা, ভারত, নেপাল, এবং মালদ্বীপের প্রতিপক্ষদের হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এই কৃতিত্ব শুধু সেনাবাহিনীর গর্বই নয়, বরং পুরো জাতির জন্যই এক সম্মানের বিষয়।

সেনাবাহিনী প্রধানের আনুষ্ঠানিক বার্তা

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলেন,

“আমাদের ফুটবল দল যেভাবে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নিজেদের সক্ষমতা এবং শৃঙ্খলা প্রদর্শন করেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এই সাফল্য আমাদের সামরিক বাহিনীর দৃঢ়তা, শারীরিক সক্ষমতা এবং মানসিক দৃঢ়তার প্রতীক।”

তিনি আরও বলেন, খেলাধুলার মাধ্যমে সেনাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে শৃঙ্খলা, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলি গড়ে উঠে। এই দলের পারফরম্যান্স ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সৈনিকদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

ধন্যবাদ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান

বুধবার সেনানিবাসে এক বিশেষ আয়োজনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ফুটবল দলের সদস্যদের সম্মাননা ও পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান, এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সামরিক সচিব, সেনা ক্রীড়া নিয়ন্ত্রক বোর্ডের সভাপতি এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ক্রীড়া নিয়ন্ত্রক বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে সনদপত্র, নগদ অর্থ পুরস্কার এবং স্মারক ট্রফি প্রদান করা হয়। দলপতি লেফটেন্যান্ট কামরুল হাসান বলেন,

“এই সম্মান শুধু আমাদের নয়, আমাদের ইউনিট, পরিবার এবং পুরো দেশের সম্মান। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্য এনে দেওয়ার।”

নারী সদস্যদের অংশগ্রহণেও প্রশংসা

এই প্রতিযোগিতায় উল্লেখযোগ্যভাবে ছিল নারী সদস্যদের অংশগ্রহণ। সেনাবাহিনীর নারী ফুটবল দল প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে এবং উল্লেখযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রদর্শন করে। সেনাবাহিনীর মহিলা ইউনিটের অধিনায়িকা লেফটেন্যান্ট সালমা আক্তার বলেন,

“আমাদের জন্য এটা ছিল বড় একটি সুযোগ। আমরা দেখিয়েছি যে নারী সৈনিকরাও ক্রীড়াক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই।”

কোচিং স্টাফ ও টিম ম্যানেজমেন্টের অবদান

এই সাফল্যের পিছনে বড় ভূমিকা পালন করেছে দলের কোচিং স্টাফ ও টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রধান কোচ মেজর (অব.) তানভীর হাসান বলেন,

“আমাদের খেলোয়াড়রা শুধু দক্ষই নয়, তারা শৃঙ্খলাবদ্ধ, সাহসী এবং টিম স্পিরিটে ভরপুর। এটাই আমাদের সফলতার মূল চাবিকাঠি।”

টিম ম্যানেজার ক্যাপ্টেন রাজীব বলেন, খেলোয়াড়দের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি, নিয়মিত অনুশীলন, পুষ্টিকর খাদ্য, এবং মানসিক সহায়তা নিশ্চিত করা হয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে তারা অনন্য সাফল্য দেখাতে পেরেছে।

সামরিক ক্রীড়া সংস্কৃতিতে নতুন দিগন্ত

সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, এই অর্জন ভবিষ্যতে সামরিক ক্রীড়া কার্যক্রমকে আরও বিস্তৃত ও আধুনিক করতে সহায়ক হবে। ইতোমধ্যে নতুন ক্রীড়া কমপ্লেক্স, আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং বিদেশি প্রশিক্ষকের নিয়োগসহ নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনী প্রধান ঘোষণা দেন,

“প্রতিটি ডিভিশনে আমরা আধুনিক ক্রীড়া সুবিধা নিশ্চিত করবো, যাতে করে সৈনিকরা তাদের প্রতিভা বিকাশে আরও অনুপ্রাণিত হয়।”

জাতীয় পর্যায়ে প্রভাব

সেনাবাহিনীর ক্রীড়া দলগুলো শুধুমাত্র সামরিক প্রতিযোগিতায় নয়, জাতীয় লিগ ও টুর্নামেন্টগুলোতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে। ফুটবল ছাড়াও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অ্যাথলেটিক্স, শ্যুটিং, কাবাডি, ভলিবল, বাস্কেটবল ইত্যাদি খেলায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করছে।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)-এর সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম বলেন,

“সেনাবাহিনীর দল নিয়মিতভাবে ঘরোয়া লীগে অংশগ্রহণ করে প্রতিযোগিতার মান উন্নত করছে। তাদের পেশাদারিত্ব অন্যান্য ক্লাবের জন্যও অনুকরণীয়।”

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সেনাবাহিনীর ফুটবল দলের এই অর্জন প্রশংসিত হচ্ছে। অনেকেই লিখেছেন,

“জাতির গর্ব শুধু সীমান্ত রক্ষায় নয়, খেলাধুলায়ও তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে।”

বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক মামুনুর রশীদ বলেন,

“এই অর্জন ভবিষ্যতে সামরিক ও বেসামরিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়াবে।”

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা আগামী বছরে আন্তর্জাতিক সামরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় (CISM World Military Games) অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ক্যাম্প, ফিজিওথেরাপি সাপোর্ট ও মনোবিদ নিয়োগের পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে।

উপসংহার

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শুধু একটি প্রতিরক্ষা বাহিনী নয়,

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url