ভোটের তারিখ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি: সিইসি
ভোটের তারিখ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি: সিইসি
“নির্বাচন সামনে রেখে গুজব ও জল্পনা বেড়েই চলেছে, তবে সিইসির সাফ জানানো—প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কোনো নির্ধারিত আলোচনায় যাননি”
এই
বক্তব্য স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা এবং
গুজব
নিরসনের এক
প্রয়াস
হলেও,
এতে
নতুন
করে
আলোচনার ঝড়
উঠেছে
রাজনৈতিক ও
মিডিয়া
মহলে।
কী বলেছেন সিইসি?
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে
সাংবাদিকদের এক
প্রশ্নের জবাবে
সিইসি
কাজী
হাবিবুল আউয়াল
বলেন:
“প্রধান
উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সেখানে নির্বাচনের নির্ধারিত দিন কিংবা সম্ভাব্য সময় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। গুজবে কান দেবেন না।”
তিনি
আরও
বলেন,
“ইসি
সাংবিধানিক দায়িত্ব অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়েই
নির্বাচন আয়োজন
করবে।
নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে
কোনো
আলোচনা
আমাদের
এখতিয়ারে পড়ে
না।”
সৌজন্য সাক্ষাতের প্রেক্ষাপট
গত
সপ্তাহে প্রধান
নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের একটি
প্রতিনিধি দল
প্রধানমন্ত্রীর প্রধান
উপদেষ্টা সালমান
ফজলুর
রহমানের সঙ্গে
একটি
বৈঠক
করেন।
অনেকেই
মনে
করছিলেন, সেখানে
হয়তো
নির্বাচন নিয়ে
গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা
হয়েছে।
কিন্তু
সিইসি
কাজী
হাবিবুল আউয়ালের বক্তব্যে পরিষ্কার হয়,
বৈঠকটি
ছিল
একেবারেই প্রটোকল ভিত্তিক এবং
সৌজন্য
সাক্ষাৎ মাত্র।
সিইসির
এই
মন্তব্যকে কেন্দ্র করে
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের
পক্ষ
থেকে
ভিন্ন
ভিন্ন
প্রতিক্রিয়া এসেছে।
আওয়ামী লীগ:
আওয়ামী
লীগের
পক্ষ
থেকে
বলা
হয়েছে,
“ইসি স্বাধীনভাবে তার কাজ করছে, এটি আমরা সবসময়ই বলি। ভোটের তারিখ নির্ধারণ কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত, এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ নেই।”
বিএনপি:
বিএনপির পক্ষ
থেকে
বলা
হয়েছে,
“প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যদি নির্বাচন নিয়ে কথা না হয়, তাহলে ইসির পক্ষ থেকে কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তা জনগণকে জানাতে হবে।”
তাদের
দাবি,
“স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের” কথা বললেও
সরকার
নেপথ্যে থেকে
সবকিছু
নিয়ন্ত্রণ করছে।
নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার কী?
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, জাতীয়
সংসদ
নির্বাচনের সময়সূচি নির্ধারণ, তফসিল
ঘোষণা
এবং
নির্বাচন পরিচালনার পুরো
দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তবে
রাজনৈতিক দল,
প্রশাসন এবং
সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে
সমন্বয়
করেই
কমিশনকে কাজ
করতে
হয়।
সিইসি বারবার এই কথাই বলছেন, “আমরা সংবিধান মেনেই কাজ করব।”
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিতর্ক
সিইসির
বক্তব্য থেকে
স্পষ্ট,
তিনি
নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো
বা
আলোচনায় নিজেকে
জড়াতে
চান
না।
তবে
রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি,
নির্বাচন কমিশনের উচিত
একটি
সমঝোতা
তৈরিতে
সহায়ক
ভূমিকা
পালন
করা।
বিএনপি
ও
অন্যান্য বিরোধী
দল
বহুদিন
ধরে
“নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার” গঠনের দাবি
জানিয়ে
আসছে।
এ
প্রসঙ্গে সিইসি
বলেন:
“আমরা কোনো রাজনৈতিক
সমাধানের পক্ষপাতী নই। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়।”
বিদেশি কূটনীতিকদের আগ্রহ
সম্প্রতি বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ একাধিক
দেশের
কূটনীতিকরা নির্বাচন নিয়ে
সরব
ভূমিকা
পালন
করছেন।
তারা
সব
দলের
অংশগ্রহণে একটি
“অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য” নির্বাচন দেখতে
চান।
এমন
অবস্থায় প্রধান
উপদেষ্টার সঙ্গে
সিইসির
সাক্ষাৎ নিয়ে
আলোচনা
ছিল
তুঙ্গে। অনেকে
ভেবেছিলেন, বিদেশি
চাপ
মোকাবেলায় সরকার-ইসি যৌথ কৌশল
নিতে
চলেছে।
তবে
সিইসির
স্পষ্ট
বক্তব্যে এসব
গুজব
আপাতত
স্তিমিত হলো।
বিধান অনুযায়ী সময়সীমা
বর্তমান জাতীয়
সংসদের
মেয়াদ
শেষ
হবে
২০২৬
সালের
জানুয়ারিতে। সংবিধান অনুযায়ী, এর
আগে
৯০
দিনের
মধ্যে
জাতীয়
সংসদ
নির্বাচন আয়োজন
করতে
হবে।
এর
মানে,
২০২৫ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে
সিইসি
এই
সময়সীমা নিয়েও
কোনো
নির্দিষ্ট তারিখ
জানাননি। তিনি
বলেছেন:
“তফসিল ঘোষণার
সময়ই আমরা নির্দিষ্ট তারিখ জানাব।”
গুজবের বিপরীতে স্বচ্ছতা?
সিইসির
বক্তব্য স্বচ্ছতা আনলেও
অনেক
বিশ্লেষকের মতে,
“এই
ধরনের
সাক্ষাৎ বা
আলোচনার ব্যাখ্যা দিলে
শুধু
রাজনৈতিক বিভ্রান্তি কমে
না,
বরং
জনগণের
আস্থা
বাড়ে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড.
নাজমুল
হুদা
বলেন:
“গুজব তখনই ছড়ায় যখন রাষ্ট্রীয়
পর্যায়ে স্বচ্ছতার অভাব থাকে। সিইসির এ বক্তব্য অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য, তবে এই স্বচ্ছতা নিয়মিতভাবে বজায় রাখা দরকার।”
ভোটারদের প্রত্যাশা
অবাধ
ও
নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে
দেশের
সাধারণ
ভোটারদের মধ্যে
আগ্রহ
প্রবল।
তারা
চান—কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই
নির্বাচন কমিশন
তার
সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন
করুক।
একজন
কলেজশিক্ষার্থী বলেন,
“আমরা এমন একটা নির্বাচন চাই যেখানে সব দল অংশগ্রহণ করবে এবং ইসি কারও পক্ষে নয়, সেটা বোঝা যাবে।”
সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা
সাম্প্রতিক সময়ে
বিভিন্ন অনলাইন
পোর্টাল ও
সোশ্যাল মিডিয়ায় “ভোটের
সম্ভাব্য সময়
নির্ধারণ নিয়ে
সরকার-ইসি সমঝোতা হয়েছে”
এমন
ধরনের
তথ্য
ছড়িয়েছে।
সিইসির
এই
বক্তব্য এসব
বিভ্রান্তিকর তথ্যের
বিপরীতে স্পষ্ট
অবস্থান বলেই
বিবেচিত হচ্ছে।
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা
নির্বাচন কমিশনের সামনে
এখন
মূল
দায়িত্ব হলো—
- নিরপেক্ষভাবে
তফসিল ঘোষণা
- সব রাজনৈতিক
দলের আস্থা অর্জন
- গুজব রোধে নিয়মিতভাবে
তথ্য প্রকাশ
- নির্বাচনী
পরিবেশ বজায় রাখা
সিইসি
শেষ
কথায়
বলেন:
“আমরা কারও চাপে কাজ করব না। যা করব, তা সংবিধান ও দেশের মানুষের স্বার্থে।”
উপসংহার
সিইসি
কাজী
হাবিবুল আউয়ালের সাফ
কথা—“ভোটের তারিখ বা সম্ভাব্য
সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি”—এই বক্তব্য একদিকে
যেমন
রাজনৈতিক গুজবকে
আঘাত
করেছে,
অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রমাণের চেষ্টা
করেছে।
তবে
সামনে
যেহেতু
আরও
চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে—বিশেষ করে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও
আন্তর্জাতিক চাপ—তাই এই স্বচ্ছতা এবং
স্পষ্টতা বজায়
রাখার
মাধ্যমে ইসিকে
সামনে
এগোতে
হবে।
দেশের
গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ অনেকটাই এই
কমিশনের দায়িত্বশীল আচরণের
ওপর
নির্ভর
করছে।
Meta Description (SEO):
ভোটের
তারিখ
বা
সম্ভাব্য সময়
নিয়ে
প্রধান
উপদেষ্টার সঙ্গে
কোনো
আলোচনা
হয়নি
বলে
জানিয়েছেন সিইসি।
রাজনৈতিক মহলে
চলা
জল্পনার মধ্যে
এই
মন্তব্যে গুজবের
অবসান
হয়েছে।
SEO Keywords:
সিইসি,
ভোটের
তারিখ,
নির্বাচন কমিশন,
প্রধান
উপদেষ্টা, জাতীয়
নির্বাচন ২০২৫,
বাংলাদেশ নির্বাচন, ইসি
সংবাদ,
কাজী
হাবিবুল আউয়াল