Banner 728x90


পরকীয়ার জালে শিশুহত্যা: নূসরাতের করুণ পরিণতি

 


শিরোনাম: পরকীয়ার জালে শিশুহত্যা: নূসরাতের করুণ পরিণতি

ঢাকা, ৯ জুন ২০২৫:
মাত্র দেড় বছরের নিষ্পাপ শিশু নূসরাতকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে উঠে এসেছে এক মায়ের পরকীয়ার গল্প, যা কেবল একটি সংসারকেই নয়, প্রাণ কেড়ে নিয়েছে একটি শিশুরও।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। শিশু নূসরাতের মা (নাম গোপন রাখা হলো) দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত ছিলেন। স্বামী কাজে বাইরে থাকার সুযোগে ঘরে গড়ে ওঠে নিষিদ্ধ সম্পর্ক। তবে সেই সম্পর্কই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়ায় ছোট্ট নূসরাতের জন্য।

ঘটনার বিবরণ:

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি শিশুটি মায়ের অবৈধ সম্পর্কের সাক্ষী হয়ে পড়ছিল বারবার। এ নিয়ে বাড়িতে ঝগড়া শুরু হয়। শিশু নূসরাতের কান্না বা উপস্থিতি প্রেমিকের সঙ্গে সময় কাটাতে অসুবিধা সৃষ্টি করছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায় ‘বাধা’ সরাতেই পরিকল্পনা করা হয় ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের।

পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার রাতে শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর মরদেহকে লুকিয়ে রাখা হয় রান্নাঘরের পেছনের অংশে। পরদিন সকালে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

গ্রেপ্তার ও স্বীকারোক্তি:

ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন শিশুটির মা। তবে পুলিশের তৎপরতায় দ্রুতই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তদন্তে উঠে এসেছে, মা ও তার প্রেমিক মিলে পরিকল্পনা করে শিশুটিকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় মায়ের প্রেমিককেও আটক করা হয়েছে।

প্রতিবেশীদের প্রতিক্রিয়া:

এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে এলাকার মানুষ বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। অনেকেই বলছেন, মা নামের কেউ কিভাবে নিজের সন্তানের গলায় ফাঁস দিতে পারে? প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, শিশুটিকে প্রায়ই একা থাকতে দেখা যেত। তার কণ্ঠে ডাকে মমতা থাকলেও, মায়ের চোখে ছিল বিরক্তি।

শিশু নির্যাতন ও পারিবারিক অবক্ষয়:

এই ঘটনার পর শিশু সুরক্ষা ও পারিবারিক মূল্যবোধ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, পারিবারিক অবক্ষয়, নৈতিক সঙ্কট এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার অভাব থেকেই এমন ঘটনা বাড়ছে।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এমন ঘটনায় শুধু আইন নয়, সমাজকেও সোচ্চার হতে হবে। শিশুদের নিরাপত্তা শুধু পরিবারের ওপর ছেড়ে দিলে হবে না, প্রতিবেশী এবং সমাজকেও দায়িত্ব নিতে হবে।


উপসংহার:
দেড় বছরের শিশু নূসরাত তার জীবনের অর্থটাই বোঝার আগেই হারিয়ে ফেলল প্রাণ। মা নামের ছায়ায়, যেখানে নিরাপত্তা পাওয়ার কথা, সেখানেই গলা টিপে ধরা হলো তাকে। সমাজে যখন মায়েরা সন্তানের প্রাণঘাতক হয়ে ওঠে, তখন সেখানে প্রশ্ন উঠে পুরো মূল্যবোধের কাঠামো নিয়েই। এই ঘটনার ন্যায়বিচার যেন দ্রুত সম্পন্ন হয় — এটাই এখন সকলের একমাত্র দাবি।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url