আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে আসছে ইসরায়েলের ক্ষতচিহ্ন | Israel's scars are emerging in the international media.
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে আসছে ইসরায়েলের ক্ষতচিহ্ন |
ভূমিকায় যুদ্ধ ও রাজনীতির অভিঘাত
গাজা সংঘাতের ধারাবাহিকতা
গাজায়
ইসরায়েল ও
হামাসের মধ্যকার রক্তক্ষয়ী সংঘাত
শুধু
মধ্যপ্রাচ্য নয়,
গোটা
পৃথিবীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। বছরের
পর
বছর
ধরে
চলা
এই
বিরোধের মধ্যে,
সাম্প্রতিক হামলা
ও
পাল্টা
হামলায়
বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু
ও
ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে উঠে
এসেছে
ব্যথিত
হৃদয়ে।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট
বিনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার
এখন
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, বিক্ষোভ ও
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মুখর।
বিচার
বিভাগের সংস্কার নিয়ে
চলা
বিক্ষোভ এবং
সেনাবাহিনীর কিছু
অংশের
অসন্তোষ এই
মুহূর্তে ইসরায়েলের রাজনৈতিক ভারসাম্যকে নড়বড়ে
করে
তুলেছে।
জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ ও প্রতিবেদন
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ও
ইউএনএইচসিআর ইতোমধ্যেই একাধিক
রিপোর্ট প্রকাশ
করেছে
যেখানে
বেসামরিক হত্যার
বিষয়টি
গুরুত্ব পেয়েছে। গাজায়
শিশু
নিহত
হওয়ার
সংবাদগুলো ইসরায়েলি সামরিক
অভিযানের নৈতিকতা নিয়ে
প্রশ্ন
তুলেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কী বলছে
বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরা – ভিন্ন দৃষ্টিকোণ
বিবিসি
সাধারণত নিরপেক্ষ থাকতে
চায়,
তবে
ইসরায়েলি হামলার
সময়ও
তাদের
ভাষায়
“Disproportionate Force” শব্দগুচ্ছটি ব্যবহার করেছে।
সিএনএন
ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে
শক্ত
অবস্থান নিলেও,
সম্প্রতি কিছু
প্রতিবেদন হামলার
নৃশংসতা নিয়েও
প্রশ্ন
তুলেছে। আল
জাজিরা
বরাবরই
ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান নিয়ে
এসেছে
মানবিক
দিক
তুলে
ধরে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণ
‘The scars of war on Israeli minds’ শিরোনামে নিউ ইয়র্ক টাইমস
একটি
বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ
করেছে
যেখানে
যুদ্ধ
শেষে
ইসরায়েলি জনগণের
মানসিক
অবস্থা
এবং
সামাজিক ভাঙনের
চিত্র
ফুটে
উঠেছে।
ফরাসি ও জার্মান মিডিয়ার ভাষ্য
ল'মোন্দ (Le Monde) এবং ডির স্পিগেল (Der Spiegel) পত্রিকাগুলো ফিলিস্তিনি শিশু
ও
নারী
মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলি নীতির
কঠোর
সমালোচনা করেছে।
তারা
বলেছে,
“নিরাপত্তা হোক
আত্মরক্ষার অধিকার,
তা
কখনো
গণহত্যা হতে
পারে
না।”
দক্ষিণ এশিয়ার মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া
ভারতীয়
ও
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিষয়ে
ব্যাপক
সমালোচনা দেখা
গেছে।
মুসলিম
সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মিডিয়া
জনমতকে
প্রভাবিত করছে,
যা
কূটনৈতিক স্তরেও
প্রতিফলিত হচ্ছে।
ইসরায়েলি জনগণের ক্ষতচিহ্ন ও যুদ্ধ পরবর্তী মানসিক অবস্থা
যুদ্ধ-পরবর্তী মানসিক অবসাদ
বিভিন্ন ইসরায়েলি ক্লিনিকে এখন
পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে (PTSD) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ
করে
গাজা
সীমান্তবর্তী এলাকায়
বসবাসরত নাগরিকরা সবচেয়ে
বেশি
ক্ষতিগ্রস্ত।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কণ্ঠ
একজন
ইসরায়েলি মা
সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন,
“আমার
সন্তান
এখন
রাতে
ঘুমোতে
ভয়
পায়,
কারণ
সে
মনে
করে
আবার
রকেট
পড়বে।”
এই
বক্তব্যই বলে
দেয়,
যুদ্ধ
শুধু
সীমান্তে নয়,
প্রতিটি হৃদয়ে
ক্ষতচিহ্ন রেখে
যায়।
আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুন
স্কুল-কলেজে বাচ্চাদের মানসিক চাপ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো
হয়েছে।
শিশুদের নিয়মিত
কাউন্সেলিং দেওয়া
হচ্ছে।
অনেক
শিক্ষার্থী যুদ্ধের সময়ে
পরিবার
হারানোর কারণে
মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিশ্লেষণ
#PrayForIsrael
বনাম #FreePalestine
এই
দুটি
হ্যাশট্যাগ হয়ে
উঠেছে
প্রতীকী যুদ্ধের অস্ত্র। একদিকে
ইসরায়েলের জন্য
সহানুভূতি, অন্যদিকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও
মানবাধিকার।
ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি নেটিজেনদের আবেগময় পোস্ট
টুইটার,
ইনস্টাগ্রাম ও
ফেসবুক
প্ল্যাটফর্মগুলোতে ছড়িয়ে
পড়েছে
নিহত
শিশুদের ছবি,
বিধ্বস্ত বাড়ির
ভিডিও।
এমনকি
ইসরায়েলি সেনাদের পরিবারদেরও কান্নাজড়ানো পোস্ট
দেখা
গেছে।
তথ্য যুদ্ধে কে এগিয়ে?
এমন
এক
বিশ্বে
যেখানে
তথ্যই
অস্ত্র,
সেখানে
দুই
পক্ষই
সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করছে
সমর্থন
আদায়ের
মাধ্যম
হিসেবে। তবে
ফিলিস্তিনি পক্ষে
সহানুভূতি বেশি
দেখা
যাচ্ছে।
বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া ও নীতিমালা
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অবস্থান
যুক্তরাষ্ট্র এখনো
ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’-এর পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। তবে
ইউরোপীয় ইউনিয়ন
কিছু
অংশ
এখন
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে খোলামেলা সমালোচনা করছে।
আরব বিশ্বের কূটনৈতিক বার্তা
সৌদি
আরব,
কুয়েত,
কাতার
ও
তুরস্ক—সবাই এই হামলার
বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। কূটনৈতিক স্তরে
ইসরায়েলের ওপর
চাপ
বাড়ছে।
জাতিসংঘের প্রস্তাবনা ও সম্ভাব্য প্রভাব
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এসেছে
বারবার,
যদিও
যুক্তরাষ্ট্র ভেটো
দিয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য তদন্তেরও কথা
উঠেছে।
উপসংহার: বিশ্বমঞ্চে ইসরায়েলের অবস্থান
ভবিষ্যৎ কৌশল ও চ্যালেঞ্জ
ইসরায়েল এখন
চাপে
আছে—একদিকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক চাপ।
অস্ত্রের জবাব
কূটনীতিতে পাওয়া
সম্ভব
নয়
যদি
না
মানবিক
মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেওয়া
হয়।
আন্তর্জাতিক চাপ ও কূটনৈতিক জবাবদিহিতা
গণমাধ্যম ও
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন
শুধু
বার্তাবাহক নয়,
তারা
ইতিহাসের সাক্ষ্য। ইসরায়েলের প্রতি
সমর্থন
আর
নিঃশর্ত থাকবে
না—এই বার্তাই এখন
বিশ্ব
জানিয়ে
দিচ্ছে।
১. কেন ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে?
→ গাজায়
বেসামরিক মানুষের ওপর
হামলা
ও
শিশু
হত্যার
অভিযোগই মূলত
সমালোচনার কেন্দ্রে।
২. আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিভাবে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরছে?
→ পশ্চিমা মিডিয়া
কিছুটা
নিরপেক্ষ, তবে
আরব
ও
দক্ষিণ
এশিয়ার
মিডিয়া
বেশি
সমালোচনামূলক।
৩. ইসরায়েলি জনগণের মধ্যে যুদ্ধ-পরবর্তী মানসিক প্রভাব কতটা ভয়াবহ?
→ PTSD থেকে
শুরু
করে
আত্মহত্যা প্রবণতা পর্যন্ত দেখা
যাচ্ছে;
শিশু
ও
নারীরা
সবচেয়ে
বেশি
ক্ষতিগ্রস্ত।
৪. ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ কী হতে পারে?
→ জাতিসংঘে তদন্ত,
আন্তর্জাতিক আদালতে
মামলা
এবং
কূটনৈতিকভাবে একঘরে
হয়ে
পড়ার
সম্ভাবনা রয়েছে।
৫. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসরায়েল কতটা সমর্থন পাচ্ছে?
→ কিছু
আন্তর্জাতিক সমর্থন
থাকলেও,
সামগ্রিকভাবে ফিলিস্তিনপন্থী আবেগ
বেশি
দেখা
যাচ্ছে।