গাজায় ইসরায়েলের কার্যকলাপ যুদ্ধাপরাধ: যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকারোক্তি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানের বিভিন্ন দিক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনা করে আসছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এবার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরায়েল গাজায় যে ধরনের হামলা ও সামরিক কার্যক্রম চালিয়েছে, তা "নিঃসন্দেহে যুদ্ধাপরাধ" এর আওতায় পড়ে।
এই মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “গাজার পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগজনক। ইসরায়েলি বাহিনী এমন কিছু সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জাতিসংঘসহ অন্যান্য দেশের চাপ বাড়ছে
ম্যাথু মিলারের এই বক্তব্য এমন এক সময় এলো যখন জাতিসংঘসহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্র গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। বিশেষ করে শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে বোমা বর্ষণ, মানবিক সহায়তা আটকে দেওয়া এবং হাসপাতালসহ বেসামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগ ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের পরিবর্তন?
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের এমন বক্তব্যকে আন্তর্জাতিক মহল একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত বলেই দেখছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসনের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ এবং দেশের অভ্যন্তরে জনমতের পরিবর্তন এর পেছনে কাজ করছে।
ম্যাথু মিলার বলেন, “আমরা কোনো পক্ষকে ছাড় দিচ্ছি না। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। যদি কোনো পক্ষ যুদ্ধাপরাধ করে থাকে, আমরা তা চিহ্নিত করব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়া
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এমন মন্তব্যের পর এখনো ইসরায়েল সরকার সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে পূর্বের মতোই তারা নিজেদের “আত্মরক্ষার অধিকার” এর কথা বলেই অবস্থান নিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি
এই ঘটনার পর মানবাধিকার সংগঠনগুলো আবারও জোরালোভাবে আন্তর্জাতিক স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (HRW), অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ একাধিক সংগঠন ইতোমধ্যে গাজায় চলমান মানবিক সংকটের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।
শেষ কথা
যুক্তরাষ্ট্রের এই স্বীকারোক্তি শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, সমগ্র আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (ICC) তদন্ত এখন আরও জোরালো হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।