ফের উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য: একদিকে ইসরায়েলে হামলা, অন্যদিকে ইরানে বিস্ফোরণ
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা, ছড়াচ্ছে যুদ্ধের আশঙ্কা
মধ্যপ্রাচ্যের এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা শুধু ইরান-ইসরায়েল সীমিত দ্বন্দ্ব নয়, বরং এটি গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে। যুদ্ধ যেন আর কোনো সমাধান না হয়—এটাই এখন সময়ের দাবি। অন্যথায় গোটা অঞ্চলটিই পরিণত হতে পারে এক ভয়াবহ ধ্বংসস্তূপে।
মিউজিক] ইরানের রাজধানী তেহরানের পশ্চিমাঞ্চলে ইসলাম শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সেই সঙ্গে সেখানে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের সোশ্যাল মিডিয়ার বরাদ দিয়ে ইরান ইন্টারন্যাশনালের এক লাইভ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। তবে ঠিক কি কারণে এই বিস্ফোরণ হয়েছে, এতে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সংবাদ মাধ্যমটি। ইরান ইন্টারন্যাশনাল এর পোস্ট করা ভিডিওতে দফায় দফায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সেই সঙ্গে আকাশে আলোর ঝলকানি দেখা গেছে। এর আগে 12 দিনের সংঘাত
শেষে ইসরাইলের সঙ্গে ইরানের যুদ্ধবিরোতি শুরু হয়। যুদ্ধবিরতির পরেও উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরোতি লঙ্ঘনের অভিযোগ জানিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে ইরান দাবি করেছে যুদ্ধবিরোতি হলেও ইসরাইল যেকোনো সময় আবারো হামলা চালাতে পারে। এদিকে ইয়েমেন ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। এ নিয়ে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে বীরসেবা, দিমোনা এবং আশেপাশের শহরগুলোতে সতর্কতা সাইরেন বাজানো হয়েছে। [মিউজিক] আজ শনিবার টাইমস অফ ইসরাইলের লাইভ প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ
জানিয়েছে তারা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভূপাতিত করতে কাজ করছে। ইসরাইলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনী হুথি বিদ্রোহীরা এই হামলা চালিয়েছে। আইডিএফ কিছুক্ষণ পর জানায় তারা হুথিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে ভূপাতিত করেছে। এছাড়া এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলেও জানিয়েছে আইডিএফ। ফাস্টবিট তাজ
মধ্যপ্রাচ্য যেন আর কখনও শান্তির মুখ দেখতে পারছে না। ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরই ইরানের একটি সামরিক স্থাপনায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ সংঘটিত হয়। দু’টি ঘটনার মধ্যে কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা, তা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে উদ্বেগ।
ইসরায়েলের উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
স্থানীয় সময় অনুযায়ী শুক্রবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ইসরায়েলের বিয়ারশেবা অঞ্চলে একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জানায়, হামলার সময় ডোম সিস্টেম কিছু ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে পারলেও অন্তত তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভেদে সফল হয়।
হামলার কারণে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিয়ারশেবার বিভিন্ন এলাকায়। জরুরি সতর্কতা সাইরেন বাজতে শুরু করে, মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে থাকে। জানা যায়, অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন এবং কয়েকটি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হামলার পেছনে কারা?
হামলার দায় এখনো কোনো গোষ্ঠী আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি। তবে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সূত্র দাবি করছে, এ হামলার পেছনে থাকতে পারে গাজাভিত্তিক হামাস বা হিজবুল্লাহর সহযোগিতায় পরিচালিত একটি নতুন মিলিশিয়া গোষ্ঠী, যারা ইরানের প্রত্যক্ষ সহায়তায় কাজ করছে।
ইরানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ
অন্যদিকে একই রাতে ইরানের ইসফাহান প্রদেশের একটি সামরিক গুদামে ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিশাল আগুনের গোলা আকাশে উঠছে এবং বিস্ফোরণের শব্দ বহু কিলোমিটার দূর পর্যন্ত শোনা গেছে।
ইরান সরকার প্রথমে এ ঘটনাকে 'কারিগরি ত্রুটিজনিত দুর্ঘটনা' বলে দাবি করলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি সাইবার বা ড্রোন হামলার ফল হতে পারে।
সিসিটিভি ও স্যাটেলাইট ফুটেজে কী ধরা পড়েছে?
ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিস্ফোরণের ঠিক আগমুহূর্তে আকাশে ছোট আকারের ড্রোন দেখা গেছে। মার্কিন স্যাটেলাইট ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের উৎপত্তিস্থলটি ছিল একটি ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগার, যেখানে শাহেদ সিরিজের ড্রোন ও ফাতেহ-১১০ ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ ছিল।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্র:
হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “মধ্যপ্রাচ্যে চলমান হিংসা ও উত্তেজনা আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।”
রাশিয়া:
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “এই সংঘর্ষ সামগ্রিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করছে।”
চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন:
দুই পক্ষই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এই অবস্থায় নতুন কোনো যুদ্ধে জড়ানো পুরো অঞ্চলকেই অনিয়ন্ত্রিত বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
🛰️ বিশ্লেষকদের মতামত
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েল ও ইরান এই মুহূর্তে একে অপরকে ঠেকাতে প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। গত মাসেই ইরান অভিযোগ করেছিল, ইসরায়েল তাদের একটি গোপন পরমাণু স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
ইতোমধ্যে ইরান প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে। তারা বলেছে, “যদি এই বিস্ফোরণের সঙ্গে ইসরায়েলের যোগসাজশ থাকে, তবে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।”
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি?
এই ধরনের পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে নতুন নয়। গত এক দশকে ইরান ও ইসরায়েল প্রায়শই গোপন হামলা, সাইবার অ্যাটাক, এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত চালিয়ে আসছে। তবে এবার পরিস্থিতি আরও জটিল ও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মহল।
সম্ভাব্য পরিণতি: যুদ্ধের কিনারায়?
এই পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরুর সম্ভাবনাকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে উভয় দেশই সামরিক প্রস্তুতি বাড়াচ্ছে এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে।
সংক্ষেপে মূল পয়েন্টগুলো:
-
ইসরায়েলের বিয়ারশেবা অঞ্চলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
-
ইরানের ইসফাহান প্রদেশে সামরিক স্থাপনায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ
-
ড্রোন ও সাইবার হামলার আশঙ্কা
-
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উদ্বেগ
-
যুদ্ধ পরিস্থিতি ঘনিয়ে আসছে
উপসংহার
মধ্যপ্রাচ্যের এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা শুধু ইরান-ইসরায়েল সীমিত দ্বন্দ্ব নয়, বরং এটি গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে। যুদ্ধ যেন আর কোনো সমাধান না হয়—এটাই এখন সময়ের দাবি। অন্যথায় গোটা অঞ্চলটিই পরিণত হতে পারে এক ভয়াবহ ধ্বংসস্তূপে।
মিউজিক] ইরানের রাজধানী তেহরানের পশ্চিমাঞ্চলে ইসলাম শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সেই সঙ্গে সেখানে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের সোশ্যাল মিডিয়ার বরাদ দিয়ে ইরান ইন্টারন্যাশনালের এক লাইভ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। তবে ঠিক কি কারণে এই বিস্ফোরণ হয়েছে, এতে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সংবাদ মাধ্যমটি। ইরান ইন্টারন্যাশনাল এর পোস্ট করা ভিডিওতে দফায় দফায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সেই সঙ্গে আকাশে আলোর ঝলকানি দেখা গেছে। এর আগে 12 দিনের সংঘাত
শেষে ইসরাইলের সঙ্গে ইরানের যুদ্ধবিরোতি শুরু হয়। যুদ্ধবিরতির পরেও উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরোতি লঙ্ঘনের অভিযোগ জানিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে ইরান দাবি করেছে যুদ্ধবিরোতি হলেও ইসরাইল যেকোনো সময় আবারো হামলা চালাতে পারে। এদিকে ইয়েমেন ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। এ নিয়ে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে বীরসেবা, দিমোনা এবং আশেপাশের শহরগুলোতে সতর্কতা সাইরেন বাজানো হয়েছে। [মিউজিক] আজ শনিবার টাইমস অফ ইসরাইলের লাইভ প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ
জানিয়েছে তারা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভূপাতিত করতে কাজ করছে। ইসরাইলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনী হুথি বিদ্রোহীরা এই হামলা চালিয়েছে। আইডিএফ কিছুক্ষণ পর জানায় তারা হুথিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে ভূপাতিত করেছে। এছাড়া এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলেও জানিয়েছে আইডিএফ। ফাস্টবিট তাজ এটিএন বাংলা