কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াল হুমকি: "টাকা দাও, নাহলে ইজ্জত লুট"
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাস ক্রমশ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সম্প্রতি রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দ্বারা সাধারণ নাগরিকদের হয়রানি, চাঁদাবাজি ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের পাশাপাশি নারী ও কিশোরীদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগও উঠেছে।
কী ঘটছে?
কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ফেসবুক, মেসেঞ্জার বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের শিকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রথমে তারা বিভিন্নভাবে বন্ধুত্ব স্থাপন করে, পরে হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করে। অনেক ক্ষেত্রে টাকা না দিলে ভুক্তভোগীদের ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি অপহরণ বা শারীরিক নির্যাতনেরও ঘটনা ঘটেছে।
কাদের টার্গেট করছে?
এই গ্যাংগুলো প্রধানত স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী, বিশেষ করে কিশোরীদের টার্গেট করছে। এছাড়াও, যুবক-যুবতীদেরও তারা ব্ল্যাকমেইল করছে। সাম্প্রতিক এক ঘটনায় ঢাকার একটি কলেজের ছাত্রীকে ফেসবুকের মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইল করে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। টাকা না পেয়ে গ্যাং সদস্যরা তার ব্যক্তিগত ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়।
পুলিশের ভূমিকা
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এই কিশোর গ্যাংগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। সম্প্রতি কয়েকটি গ্যাংয়ের নেতাসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ রয়েছে যে অভিযুক্তরা নাবালক হওয়ায় দ্রুতই জামিনে ছাড়া পাচ্ছে, যা তাদের আরও উৎসাহিত করছে।
কী করা উচিত?
১. সচেতনতা বৃদ্ধি: অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের অনলাইন নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন করা।
২. অপরাধীদের রিপোর্ট করা: কোনো ধরনের হয়রানি বা হুমকির শিকার হলে অবিলম্বে স্থানীয় থানায় বা সাইবার ক্রাইম ইউনিটে রিপোর্ট করতে হবে।
৩. সোশ্যাল মিডিয়া সতর্কতা: অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ সীমিত রাখা এবং ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার না করা।
মন্তব্য
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির পেছনে পারিবারিক অবহেলা, ইন্টারনেটের অপব্যবহার এবং আইনের দুর্বল প্রয়োগ দায়ী। এই সমস্যা সমাধানে সামাজিক সচেতনতা ও কঠোর আইনি ব্যবস্থা জরুরি।
সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন, এবং কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হলে আইনের শরণাপন্ন হোন।
📌 সাইবার ক্রাইম রিপোর্ট করতে যোগাযোগ করুন:
🔹 জাতীয় জরুরি সেবা – ৯৯৯
🔹 সাইবার ক্রাইম ইউনিট – https://www.cybercrime.gov.bd